ভাই-বোনে ভালোবাসার পূর্ণতা

 



অথর্ব-অকর্মণ্য-অপদার্থকে ভালোবাসার কেউ থাকেনা; তবে তার একজন বোন থাকলে ভালোবাসার কমতি হয়না।

গুণ-মান-রস-রহস্যহীন একজন মানুষ আমি। নেই গতি-প্রগতি। নেই ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াশীলতা। মেধাবী নই; ব্যাক বেঞ্চার। কোনো কালেই ভালো ছাত্র ছিলাম না। গুরুকে রেজাল্টে সন্তুষ্ট করার নেই নজীর, নেই। প্রিয় স্যার অপদার্থ বলেই ডাকেন। ম্যামতো হরহামেশাই রেগেমেগে গাঁধা সম্বোধন করেন। কোনো কালে খুঁতহীন ক্রিয়া-কর্ম সম্পাদন করতে পেরেছি বলে মনে হয়নি। যোগ্যতা-দক্ষতার থলিটা পুরোপুরি শূণ্য। আমার প্রতি কারো কোনো আস্থা-ভরসা নেই; মুখ দেখানো ব্যতিত। নিজেকে নিয়ে বলার মত কিছুই নেই; নেই ভাবার মত কিছুও। কিন্তু আল্লাহর দরবারে অনেক বড় প্রাপ্তি হলো তিনি আমাকে তিনটা বোন দিয়েছেন; যাদের চোখ দিয়ে নিজেকে দেখলে পৃথিবীর সেরা মানুষ হিসেবে আবির্ভূত হই। বোনদের কাছে আস্থা-ভরসা-প্রীতির এক মূর্তি হয়ে আছি। যেখানে আমি নিজেই একটা অপদার্থ সেখানে আমার প্রতি বোনত্রয়ের আবেগ দেখলে তাদেরকে অপদার্থ রূপে দেখি। নিজেকে নিয়ে নিজে যতটুকু উদ্বিগ্ন তার থেকে বোনরা তার ভাইদের নিয়ে বেশি চিন্তিত। শ্বশুর বাড়ির আপ্যায়ন কি তা বুঝার বয়স হয়নি; তবে বোনদের আপ্যায়ন যে পৃথিবীর সেরা আপ্যায়ন তা বুঝতে অসুবিধায় পড়িনি। আমি প্রত্যাশাহীন মানুষ তথাপিও তাদের কেন্দ্রে আমার প্রাপ্তি পরিপূর্ণ। কারণে-অকারণে কতভাবে-কতজনেই খোঁজ নেন; কিন্তু রুটিন মাফিক দিনে দুই বার খোঁজ নেয়ার আর দ্বিতীয় নেই কেউ। কন্টাক্টসে প্রায় চার হাজার জনের মোবাইল নাম্বার সংরক্ষণ থাকলেও ডায়ালে ঘুরেফিরে বোনদের নাম্বার গুলোই। মাঝে-মধ্যেই নিজেকে হারিয়ে পেলি কিন্তু যখনই বোনদের সাথে সংলাপে-আলাপে সময় কাটাই তখনই পাই প্রেরণা ও ঘুরে দাঁড়াবার শক্তি। পৃথিবীতে ভাইয়ের জন্য অধিক ভাবুক বোন বৈ দ্বিতীয় কেউ নেই। ভাই সবসময়ই থাকে বোনের দোয়ায়-মোনাজাতে-জায়নামাজে। বোনের উদাহরণ শুধুই বোন। কখনও বোনদের বলিনা, ভালোবাসি তোকে; ইহা বলতে হয়না। ভালোবাসা বুলিতে প্রকাশ হয়না, প্রকাশ হয় ক্রিয়া-কর্মে-আচরণে।
বোন তোর থেকে অধিক ভালো কে আমায় বাসবে বলো!

Comments